মার্সিডিজ এর জন্য আরেকটি হতাশার রবিবার কাটলো। হতাশার সমুদ্রে যেন হাবুডুবু খেয়েই যাচ্ছে বেচারারা। সপ্তাহ তারা শান্তিমতো শুরু করলেও ঝামেলায় পড়ে তারা ঐ একই জায়গায়।
শনিবার ম্যাক্স ভারস্টাপেন তার গাড়িকে বসালেন পোল পজিশনে। পোল পজিশন থেকে শুরুতেই তার এট্যাকিং পজিশন থাকলেও রবিবার ঠিকই রেসের প্রথম কর্নারের পরই ওয়াইড রান-অফে ফোর্সফুলি তাকে ঠেলে দেন লুইস হ্যামিল্টন। তারপর সেই ভুলের মাশুলস্বরূপ পুরো রেইস তার পিছেই কাটান ম্যাক্স। তবে, ঘটনাটা পুরোপুরি এমন না। আসুন বিশ্লেষণ করিঃ
১. প্রথম পিটস্টপে ল্যাপ-২০ এর আগে লুইস হ্যামিল্টন মাত্র ৩ সেকেন্ড পিটস্টপ ক্লিয়ার ছিলেন ম্যাক্স থেকে।
২. ম্যাক্স যখন কিছু ল্যাপ পরে তার পিটের জন্য রেডি হলেন বক্সে আসতে, তিনি অসাধারণ একটি ইন-ল্যাপ দিলেন এবং বক্স শেষে অসাধারণ এক আউট ল্যাপ দিলেন। যা, লুইসের ঐ ৩ সেকেন্ড লিড কমিয়ে আনলো।
৩. কিন্তু, মার্সিডিজ এর মাথায় বাজ পড়লো ভারস্টাপেন এর টায়ার দেখে, কারণ এগুলো বেশিক্ষণ টিকার জন্য দেয়নি তারা বুঝাই যায়।
৪. ল্যাপ-৩২ এ আসলো মার্সিডিজ স্ট্র্যাটেজিস্ট দের মাথায় সবচেয়ে বড় বাজ। ম্যাক্স ভারস্টাপেনকে দ্বিতীয়বারের মত পিটস্টপে ডাকলো রেডবুল। আবার, চেকোকে তারা ডাকলেন না পিটস্টপে।
৫. আবারোও অসাধারণ ইন আর আউট ল্যাপ দিলেন ম্যাক্স। এই অসাধারণ ইন আর আউট ল্যাপের অবদান ঠিকই তাকে আবারোও শেষ ল্যাপে ঠেলে দিলো লিডে।
৬. ম্যাক্স যখন চেকোকে পাস করছিলেন তখন তার রেডিওতে শোনা গেল এক অসাধারণ জিনিস। চেকো রেডিওতে বললেন, “Tell him(Max) to push, Let’s get them(Mercedes).
৭. ল্যাপ-৪৯ এর আগেই ভালত্তেরি রেডিওতে চেচাচ্ছিলেন তাকে পিটস্টপে নিতে, মার্সিডিজ তাকে নেয়নি। সেই ল্যাপে যখন তাকে ওভারটেক করলেন চেকো, ভালত্তেরি তো রেগে আগুন! তিনি রেডিওতে ঝেড়েই বসেন তার রাগ।
৮. চেকোর প্রথম পিটস্টপ আসে অনেক দেরিতে, তার টায়ার ম্যানেজমেন্ট এর মাস্টারক্লাসের প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে, যার কারণেই মার্সিডিজের দুই ড্রাইভার এর উপর চাপ প্রয়োগ করতে পারে রেডবুল এবং ঠিক তাই করলো তারা। মোট কথা, অসাধারণ এক স্ট্র্যাটেজির খেলা দেখালো এই রেইস
আর এই দুই দলের পিছেই ছিলো ল্যান্দো নরিস আর ড্যানিয়েল রিকিয়ার্ডো তাদের ম্যাকলারেন নিয়ে। ল্যান্দো,রিকিয়ার্ডোও স্ট্র্যাটেজিতে ভর করে কভার করেছেন পুরো ফিল্ড। মোট কথা, আন্ডারকাট আর পিটস্টপ জটিলতা সব মিলিয়েই এক অসাধারণ স্ট্র্যাটেজির দিন গেলো ফ্রান্সের প্রোভেন্সের লা-কাস্টলেটের সার্কিট পল-রিকার্ডের ফ্রেঞ্চ গ্রাঁ প্রিঁ।