কোচ হিসেবে রাসেল ডমিংগো কে নিয়োগ, সিলেক্টর হিসেবে অভিজ্ঞ আব্দুর রাজ্জাক কে নিয়োগ কিংবা নতুন প্লেয়ারদের ডেব্যু করা গত দুয়েক বছরে বিসিবি যায় করেছে তার পেছনে যুক্তি ছিল টি – টুয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১। বিসিবি বস পাপন থেকে শুরু করে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সকলেই প্রেস কে বারেবারে বলেছেন তারা যেকোন মূল্যে আসছে বিশ্বকাপে ভালো করতে চান। এক কথায় বললে বিসিবির পুরো পরিকল্পনা চলতি বছরের বিশ্বকাপ এবং ২৩ বিশ্বকাপ কে কেন্দ্র করেই। ক্যাপ্টেন তামিম ইকবাল তো দিন কয়েক পূর্বে একটু আগ বাড়িয়ে বলেই দিয়েছেন তারা জিততে চান ওয়ার্ল্ড কাপ।
টি- টুয়েন্টি বিশ্বকাপ আসছে করতে করতে প্রায় নাকের ডগায় এসে ঠেকেছে। বরাবরের মতো বিশ্বকাপ ঘিরে প্রশ্নের কমতি নেয়। এত প্রশ্নের ভিড়ে এবার ও বাদ যায়নি কে করবেন জাতীয় দলের ওপেনিং? জাতীয় দলের ওপেনার বললেই তামিম ইকবাল এর নাম টা চলে আসে সবার আগে। তার ইন্টারন্যাশনাল অভিষেক হয়েছে প্রায় ১৬-১৭ বছর দীর্ঘ এই সময় টা তে নির্ভরযোগ্য ওপেনার হিসেবে নির্বাচক রা বরাবরই তাকে বিবেচনা করে এসেছে এবং তিনি ও দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান। তবে তার বিপরীতে কে ওপেন করবেন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নির্বাচক থেকে কোচ সকলেই গত দশ পনের বছরে গলদগর্ম হয়েছেন।
তামিম ইকবাল এর ওয়ানডে এবং টেস্ট ওপেনিং নিয়ে কারো কোন প্রশ্ন না থাকলে ও টি টুয়েন্টি তে স্লো ওপেনিং এর জন্য গত কয়েক বছরে তিনি বেশ সমালোচিত হয়েছেন। এছাড়া ২০১৮ এর পর হতে এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের টি টুয়েন্টি ওপেন করেছেন লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার এবং নাঈম শেখ। চার ওপেনারের কেউ যে খুব আহামরি খেলেছেন তা কিন্তু নয়। কিন্তু সময় সল্প ম্যানেজমেন্টকে তো দুই ওপেনার সিলেক্ট করে নিতেই হবে। বলা চলে মন্দের ভালো বাছাই।
২০১৮ হতে তামিম ইকবাল খেলেছেন ১৮ ইনিংস সৌম্য ২৭ ইনিংস লিটন ২৭ ইনিংস এবং নাঈম শেখ ১২ ইনিংস। এর মধ্যে চার ব্যাটসম্যান রান করেছেন যথাক্রমে ৪৯৯, ৫৪৩, ৫৮৮ এবং ৩৭৪। লিটন এবং সৌম্য সরকারের গড় রান প্রায় সমান ২০-২১ করে। অপরদিকে তামিম এবং নাঈম শেখের গড় কিছুটা বেশি ২৭ এবং ৩৪। রান তোলার ক্ষেত্রে নাঈম ছিলেন স্লোয়েস্ট তার স্ট্রাইক রেট মাত্র ১১৮। তামিম, লিটন, সৌম্যর স্ট্রাইক রেট ১২১,১২৭ ও ১৩৬ ।
সব বিবেচনায় হয়তো নাঈম শেখকে সেরা মনে হতে পারে কিন্তু শেষ দুই সিরিজের সব ম্যাচ এ তাকে সুযোগ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি একেবারেই ফর্ম হীন। অপরদিকে সে তুলনায় গত এক বছরে তামিম বেশ কনসিস্টেন্ট যদিও কিছুটা স্লো। সৌম্য , লিটন এর স্ট্রাইক রেট বেশ ভালো হলে ও বড় দলের সামনে বরাবরই ফ্লপ এই দুই ব্যাটসম্যান। গত সিরিজে ওপেন করেছিলেন সৌম্য – নাঈম । নাঈম ব্যর্থ হলে ও সৌম্য বেশ ভালই করেছেন।
তামিমের নিকটঅতীতের ফর্ম সেই সাথে অভিজ্ঞতার কথা বিবেচনায় তামিমের জায়গায় নির্বাচকরা হয়তো আর কিছু বিবেচনা করতে চাইবেন না। টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপ এর আগে অজী সিরিজই হয়তো টিম বাংলাদেশ এর শেষ এসাইনমেন্ট। এই সিরিজেই তামিম এর বিশ্বকাপ পার্টনার নির্বাচিত হবেন। তিন ক্যান্ডিডেট সৌম্য, নাঈম ও লিটন তিনজনই দলে রয়েছেন যদিও শোনা যাচ্ছে ইনজুরির দরুন খেলবেন না লিটন। বাকি রইলো সৌম্য – নাঈম। সৌম্য আগের সিরিজে ভালো করেছেন এটা হয়তো তাকে বাড়তি সুবিধা দিবে। যদি সব ঠিক থাকে তবে এই তিনে যিনি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেরাটা দিতে পারবেন তিনিই হবেন বিশ্বকাপে তামিম ইকবালের পার্টনার।
বিশ্বকাপে তামিম ইকবালের পার্টনার যেই হোন না কেন আমরা শুনতে চায় সফলতার গল্প আমরা লিখতে বিজয়গাথা। টিম টাইগার্স এর জন্য অগ্রিম শুভকামনা।