হারিয়ে ফেলছেন নিজেকে এই কথাটা ঠিক কোহলির সাথে যায়না কারণ যতবার মানুষের মনে হয়েছে এমনটা তিনি ফিরে এসেছেন আরও শক্তিশালী হয়ে। ২০১১ এর কালকের দিনেই অভিষেক তার এবং তিনি এখন বিশ্ব টেস্ট চেম্পিয়ানশীপ এর ফাইনাল খেলছেন এবং হারিয়ে যাওয়া নিজেকে আবারও খোজার চেষ্টা করছেন।
২০১১ সালের টেস্ট অভিষেক তারপর সাদামাটা একটা বছর কাটানোর পর ২০১২ থেকে নিজের পরিচয় দেওয়া শুরু করেন ৪৯.২১ এর এভারেজ এ ৬৮৯ রান করেন ৩টি শতক নিয়ে এবং ঠিক ২০১২ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায় নেওয়া ড্রাভিডের উত্তরসুরি হিসেবে ভারত দেখতে শুরু করেন তাকে কিন্তু তার সাথে এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেয় পুজারাও।
২০১১-২০১২ গাভাস্কার-বর্ডার ট্রফিতে তিনি ৩০০ রান করেন একটি শতক নিয়ে মাত্র ৩৭.৫০ এভারেজ এ তবে সে ভারতীয় দলের সর্বোচ্চ স্কোরার থাকেন এবং তিনি অনেক সুনাম লাভ করেন তার এই পারফর্মেন্স এর কারণে। ঠিক তার পরে ২০১৩ সালে অসাধারণ একটা বছর কাটান তার ক্যারিয়ারে তবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে সে নিজেকে বড় মঞ্চে নিজেকে তুলে ধরতে পারেন না এবং তা পরিস্কার হতে শুরু করে ২০১৪ সালে ভারতের ইংল্যান্ড সফরের মধ্য দিয়ে যেখানে তিনি মাত্র ১৩৪ রান করেন পুরো সিরিজে মাত্র ১৩.৪০ এভারেজে কিন্তু সেখানে তার স্ট্রাইক রেট থাকে ৪৪.৫২ যেখানে কনফিডেন্ট কোহলি চিন্তা করেন তার অবশ্যই কিছু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার এবং তিনি সেগুলো নেন আর নিজেকে অনেক ভালো ভাবেই ফিরে পান। ২০১৪-২০১৫ গাভাস্কার-বর্ডার ট্রফিতে, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে কনফিডেন্ট কোহলি ৬৯২ রান করেন ৪ টি শতক নিয়ে প্রায় ৮৬.৫০ এভারেজ এবং ৬৩.৩১ স্ট্রাইক রেট সহকারে । সফর শেষে তিনি এক সাক্ষাতকারে জানান তাকে কীভাবে তার ডায়েট এবং ওয়েট লিফটিং অস্ট্রেলিয়ার গতিময় বলারদের বিরুদ্ধে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে।
২০১৫ এর বিশ্বকাপের পর ২০১৬-২০১৯ পর্যন্ত তিনি টেস্ট ক্রিকেটে তার সোনালি সময় কাটান। এই সময়ে তিনি প্রায় ৪২০৮ রান করেন যেখানে তার মোট এভারেজ ও স্ট্রাইক রেট ৫৪.৩৩ এর নিচে নামেনি কোন বছরেও। এই পুরো সময়টা জুড়ে তিনি ১৬ টি টেস্ট শতক করেন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে ভারত ২০১৪ সালের পরে আবারও ইংল্যান্ড সফরে যায় এবং সেই সিরিজে কোহলি অসাধারণ পারফর্মেন্স করেন। সে সিরিজের টপ স্কোরার থাকেন ২ টি শতক নিয়ে ৫৯.৩০ এর এভারেজ এবং ৫৭.৮৫ এর স্ট্রাইক রেট এর সাথে। সেই সিরিজের প্রথমে ইংল্যান্ড কিংদবন্তী জেমস এন্ডারসন মিডিয়া তে রিতিমত চ্যালেঞ্জ দেন যে সে কোহলিকে ২০১৪ সালে ৪ বার আউট করার রেকর্ড এবার আরও বাড়াতে চায় এবং সেই কাজে কোহলি তাকে ব্যর্থ করে এবং শুধু তার বিরুদ্ধে ১১৪ রান করেন পুরো সিরিজে এবং ১৩ টি বাউন্ডারি স্কোর করেন ৪২.২ স্ট্রাইক রেটে তার মধ্যদিয়ে নিজেকে ফিরে পান আরও ভয়ংকর শক্তিশালী রুপে।

তবে করোনা পরবর্তী সময়ে ক্রিকেট আবার আগের মত ফিরলেও কোহলি ফিরতে পারেন নি। আগের মত নিজেকে তুলে ধরতে পারছেন না তেমন শক্তিশালীভাবে। ২০২০ সালে ক্রিকেট ফিরলেও তার এভারেজ গিয়েছে প্রায় তলানিতে ১৯.৩৩ এভারেজ এ ৪০.৯৮ স্ট্রাইক রেট তার অভিষেক এর বছরের থেকেও কম যাতে পরিস্কারভাবেই বলা যায় ‘’ব্যাক টু জিরো’’। ক্রিকেট অনেকদিন পর ফেরায় এমনটা হতে পারে ভেবেছিলেন অনেকেই কিন্তু ২০২১ এও নিজেকে তুলে ধরতে পারছেন না ভিরাট কোহলি ৩০.৮৫ এর এভারেজ এবং মাত্র ৪২.৮৫ স্ট্রাইক রেট যেটা তার অভিষেক বছরের থেকে মাত্র ০.১৫ বেশী।

কাল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের আসরের ফাইনাল খেলছে ভারত প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড কিন্তু গতানুগতিকভাবে কোহলি আবারও ব্যর্থ হয়েছেন নিজেকে তুলে ধরতে মাত্র ৪৪ রান করে ৩৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে কনফিডেন্সলেস কোহলি প্যাভিলিয়ন এ ফিরে যান নিজের আইপেল সতীর্থ এর করা বল এ। শুধু তার ব্যাটিং নয় রিভিউ এর ক্ষেত্রেও নিজেকে খুজছেন কোহলি এই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের আসরে প্রায় ১৫টি রিভিউ নিয়েছেন নিজে ব্যাটিং এ থেকে এবং তার ৮ টিতেই সুবিধা করতে পারেন নি
মাত্র ২ টি তে পেয়েছেন সফলতা। তবে এখন দেখার বিষয় এই বৃষ্টিভরা টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংস এ কোহলি নিজেকে খুজে পান কিনা অথবা করতে হবে আরও অপেক্ষা।