দেখতে দেখতে ১৬ টি বছর পেরিয়ে গেলেও এটা সুনিশ্চিত আশরাফুল কার্ডিফে সেদিনের অনবদ্য সেঞ্চুরির রোমাঞ্চ আজো অনুভব করেন। শুধু আশরাফুল কেন পুরো বাঙালি জাতি আশরাফুলের সেই হাস্যোজ্জ্বল ছবি আজো হৃদয়ে ফ্রেমবন্দী করে রেখেছে। কেনই বা করবে না, সে জয়টায় যে মাইটি অজি দের এগেইনস্টে শর্টার ফরম্যাটে বাংলাদেশের একমাত্র জয়।

গত ১৬ বছরে বাংলার ক্রিকেটে ঘটেছে বহু পরিবর্তন। রূপকথার গল্পের মতো এগিয়ে গিয়েছে টিম টাইগার্স। বছর চারেক পূর্বে অজিদের ঘরের মাঠে টেস্ট ও হারিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু শরটার ফরম্যাটে ক্যাঙ্গারু বাহিনীর বিরুদ্ধে জয়টা যেন অধরায় রয়ে গেল বাংলার টাইগারদের।

দাম্ভিক বলে খ্যাত অস্ট্রেলিয়ান রা যে আমাদের বিরুদ্ধে খেলতেই চায় না এই ক্ষোভ বহুদিনের। অবশেষে পাওয়া যাচ্ছে তাদের, আগস্টের ৩ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বনাম অস্ট্রেলিয়া ৫ ম্যাচের টি- টুয়েন্টি সিরিজ।

জীবনে প্রথম ক্রিকেটীয় জ্ঞান হয়তো ডন ব্র্যাডম্যান কিংবা গ্লেন ম্যাকগ্রার নাম শুনে। প্রথম ক্রিকেটীয় আইডল হয়তো ওয়াহ ব্রাদার কিংবা রিকি পন্টিং। ক্রিকেটিয় আকাশের সিংহভাগ তারকায় যেন অস্ট্রেলিয়া তার গর্ভে নিয়ে রেখেছে। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মাইটি অস্ট্রেলিয়ার সেই তারার মেলায় ঠাসা দল হয়তো এই সিরিজে আসছে না। কিন্তু তাতে কি অজি দের নামে কিংবা ভারে কোনই পার্থক্যের সৃষ্টি করে? সল্প শক্তির দল নিয়েই টি- টুয়েন্টির মহা শক্তিধর দল উইন্ডিজ কে নাকানি চুবানি দিয়ে তবেই বাংলায় পা রাখছে অজিরা।

ওয়ার্নার, স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল এর পর ইঞ্জুরির কারনে অ্যারন ফিঞ্ছ কে ও মিস করতে চলছে টিম অস্ট্রেলিয়া। এটি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের জন্য সুসংবাদ। তবে সবটায় সুসংবাদ নয় বাংলাদেশ ও তার দুই ব্যাটিং স্তম্ভ তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম কে ছাড়ায় মাঠে নামতে চলছে।

তামিমের বিকল্প ভাবা লিটন ও পড়েছে ইঞ্জুরিতে, খেলবেন না পুরো সিরিজ এখন পর্যন্ত এমনটাই জানিয়েছে বিসিবি। তবে সুখকর বিষয় হচ্ছে পূর্ণ ফিট মুস্তাফিজ কে পেতে চলছি সিরিজের শুরু হতেই। কে নিবেন তামিম মুশফিকের জায়গা এই প্রশ্নের উত্তর যেন মিলছে না কোনভাবেই । এক তামিমের পার্টনার খুজতেই গত দশ বছরে বিসিবির নাজেহাল অবস্থা তার উপরে নেই লিটন কুমার দাস। তাই আপাতত হয়তো নাইম – সৌম্যেই ভরসা করতে হচ্ছে। সস্তির খবর সৌম্য সরকার গত সিরিজে রান পেয়েছেন। তবে রানের সাথে জিম্বাবুয়ে প্রেম থাকলে হয়তো আরো একবার হতাশাই দেখতে হবে। সেই সাথে নাম্বার তিনে সাকিব তো রয়েছেনই। মুশফিকের বিকল্প আদৌ বাংলাদেশ ক্রিকেটে আছে কিনা সেটা বেশ বড় প্রশ্ন তবে আপাতত কাউকে তো সামাল দিতেই হবে। এই পজিশনে ম্যানেজমেন্ট হয়তো মিথুন কিংবা মোসাদ্দেককেই বিবেচনা করবে। এছাড়া মিডল অর্ডারে রিয়াদ, আফিফ এবং সদ্য অভিষিক্ত শামিম পাটোওয়ারি হয়তো থাকবেন। বোলিং লাইনাপে আপাতত মুস্তাফিজ, তাসকিন, সাইফুদ্দিন, মিরাজের বাইরে বাংলাদেশ ভাবতে পারছে না।

টিম অস্ট্রেলিয়ার নামের পুর্বে ক্ষীণ কিংবা খর্বশক্তি যেই বিশেষণই যোগ করেন না কেন ২২ গজে অস্ট্রেলিয়া সবসময়য়ই তার চিরচেনা রুপে উদ্ভাসিত হতেই অভ্যাস্ত। তাই বাংলাদেশ কে হতে হবে সতর্ক। আমরা পুরো বাঙালি জাতি অন্তত আরো একবার আশরাফুলের মত লাফিয়ে পড়তে চায়। অনুভব করতে চায় অজি বধের রোমাঞ্চ। জয় বাংলা বলে নতুন পুরনো সকলেই গলা ফাটাতে চায়। শুভকামনা টিম টাইগার্স।