অবশেষে দল বাড়ছে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ১৪ দল এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ২০ দল নিয়ে।

আলোচনা-সমালোচনা, যুক্তি-পাল্টা যুক্তির পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল)। ওয়ানডে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা ১০ থেকে বাড়িয়ে ১৪ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা ১৬ থেকে বাড়িয়ে ২০ এ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইসিসি। আইসিসির নতুন এফটিপি (FTP- Future Tour Programs) অনুযায়ী ২০২৩ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে হতে যাওয়া ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপগুলোর জন্য প্রযোজ্য হতে যাচ্ছে এ নিয়ম।

অর্থাৎ এ নিয়মের অন্তর্ভুক্ত নয় চলতি বছর হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০২৩ সালে হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আগের নিয়ম অনুযায়ী চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি ও সামনের বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে যথাক্রমে ১৬ ও ১০ দলের অংশগ্রহণে।

ArenahypeICC - ArenaHype
লোগো: ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল

এছাড়াও ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ৮ দল নিয়ে আগের নিয়মে ২০২৫ সাল থেকে পুনরায় মাঠে গড়াতে যাচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। গতকাল ১লা জুন (মঙ্গলবার) আইসিসির এক ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আইসিসির নতুন এফটিপি অনুযায়ী ২০২৩ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত সূচিতে রয়েছে মোট আটটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট- দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ (২০২৭ ও ২০৩১), চারটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (২০২৪, ২০২৬, ২০২৮, ২০৩০) এবং দুটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি (২০২৫ ও ২০২৭)। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দল বাড়লেও বাড়ছে না চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তে।

এছাড়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে প্রতি দুবছর পরপর- ২০২৫, ২০২৭, ২০২৯ ও ২০৩১ সালে।

ক্রিকেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আসর হলো ওয়ানডে বিশ্বকাপ। কিন্তু এ আসরে অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম রাখার দায়ে প্রায়শই নিন্দার ঝড় বয়ে যায় ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আইসিসির উপর দিয়ে।

নতুন নিয়মে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ১৪ টি দলকে বণ্টন করা হবে দুটি গ্রুপে। দুটি গ্রুপ থেকে ৩ টি করে মোট ৬ টি দল নিয়ে হবে সুপার সিক্স রাউন্ড। সেখান থেকে পরবর্তীতে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। এরকম হলে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে ২০০৩ সালের আফ্রিকা বিশ্বকাপের নীতি।

আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০ টি দলকে ভাগ করা হবে ৪ টি গ্রুপে। প্রতি গ্রুপে ৫ টি দল থেকে ২ টি দল
যাবে পরবর্তী রাউন্ড তথা সুপার এইটে। সেখান থেকে হবে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল।

তবে আইসিসির নতুন নিয়মের বিরোধিতা করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন মোড়ল খ্যাত ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ড। যদিও তাতে নতুন নিয়মের কোনো পরিবর্তনের শঙ্কা নেই বললেই চলে। যদিও এতে বিশ্বকাপের মান কতটা বজায় থাকবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা যেতেই পারে।

আইসিসির প্রধান নির্বাহী জেফ এলারডাইস জানান,”আমাদের ইভেন্টগুলোর আয়োজক নির্বাচনের জন্য এ নীতি নমনীয়তা প্রদান করবে। অবকাঠামোগত দিক থেকে টুর্নামেন্ট আয়োজক হিসেবে অল্পসংখ্যক দেশ রয়েছে যা আয়োজক নির্বাচন প্রক্রিয়া কে সংকীর্ণ করে”।

উল্লেখ্য যে, ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হয় ১০ দলের অংশগ্রহণে, যাতে বাদ পরেছিল জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের মতো দলগুলো। আইসিসির বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী বিশ্বকাপ সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ১০ দল নিয়ে হবে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ।

বিশ্বকাপের মান রক্ষা আগে..নাকি বিশ্ববাসীর কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আগে- এ প্রশ্নে ক্রিকেটপ্রেমিদের মতপার্থক্য থাকতেই পারে।
আপনার মতামত কি!?