আরোও একবার ভুল আর ব্যর্থতায় জর্জরিত মার্সিডিজ! ভালত্তেরি যেন ব্যর্থতার খাতা থেকে নামই উঠাতে পারলেন না। লুইসের ভুলের তো যেন মাফই নেই!
ফর্মুলা ওয়ানের সর্বশেষ রেইস তথা বাকুতে যেন নাটকীয়তার ছড়াছড়ি! শুরু থেকেই রেড ফ্ল্যাগ আর ইয়েলো ফ্ল্যাগে জর্জরিত সেশন।
ল্যাপ ৩১ এ এসটন মার্টিনের লান্স স্ট্রল এর পেছনের টায়ার বিস্ফোরণে ওয়ালের দিকে ছিটকে পড়েন তিনি। রেড ফ্ল্যাগ করে দেওয়া হয় সেশন। তখন পজিশন ৫ এ ছিলেন তিনি। পেছনেই ছিলেন একই দলের সেবাস্তিয়ান ভেট্টেল।
পুরো রেইস জুড়েই দাপট দেখাচ্ছিলেন ম্যাক্স ভারস্টাপেন। পেছনেই ছিলেন লুইস হ্যামিল্টন আর একটা ভুলেই শিরোপার আশা শেষ হতে পারে ম্যাক্সের। কাহিনীর শেষটা কিন্তু এখানেই না। মাত্র ৩ ল্যাপ বাকি থাকতে পেছনের ডানপাশের টায়ার বিস্ফোরণ করে ওয়ালে ছিটকে পড়েন ম্যাক্স। কারণ ঐ একই পিরেলির টায়ার৷ পুরো রেইসজুড়েই সব ড্রাইভারই দুষছিলেন টায়ারকে। টায়ার যেন কোনভাবেই রিলায়েবল মনে হচ্ছিলোনা কারোর।
এই পর্যায়ে ভাবতেই পারেন, পিরেলির এই সমস্যার কারণে বুঝি শিরোপা হাত ছাড়া ম্যাক্স আর রেডবুলের। কিন্তু, রেসিং এর দেবতার মনে মনে যেন ছিলো অন্য কিছু।
ম্যাক্সের ক্রাশের পর রেড ফ্ল্যাগ হওয়া সেশন যখন থেমে আবার রিস্টার্ট হবে, পোল পজিশনে তখন সার্জিও পেরেজ(রেডবুল),২য় স্থানে লুইস হ্যামিল্টন (মার্সিডিজ) আর ৩য় তে সেবাস্তিয়ান ভেট্টেল (এস্টন মার্টিন)। স্ট্রিট সার্কিটে ১১ নম্বর পজিশন থেকে শুরু করে ৩য় পজিশনে চলে আসতে পারা কিন্তু ভাগ্যের চেয়েও বড় কিছু। এখানে ট্যালেন্ট, এক্সপেরিয়েন্স আর অবশ্যই ভাগ্যের এক বিরাট সংমিশ্রণ। কিন্তু, তাতেও যেন মন বসলো না রেসিং দেবতার।
রেস রিস্টার্ট এর সময় দেখাই যাচ্ছিলো লুইসের সামনের ব্রেকগুলো যেন দাউদাউ করে জ্বলছিলো আর ধুমায়িত হয়ে ছিলো। যেই বলা সেই কাজ। রেস স্টার্টের পর প্রথম কর্নারেই ভুলের খেসারত দিলেন লুইস। ছিটকে পড়লেন রেস থেকে রানঅফ এরিয়াতে আর একেবারে পজিশন ১ থেকে গেলেন পজিশন ১৬ তে! ৭ বারের ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন এর জন্য এটা তো লজ্জাজনক বটেই!
সেই মুহূর্ত থেকে শেষ পর্যন্ত রেস জিতলেন সার্জিও পেরেজ আর তার পিছেই ছিলেন সুপার সেব (সেবাস্তিয়ান ভেটেল) আর আল্ফা তাউরির পিয়েরে গ্যাসলি। ২য় ও ৩য় স্থানে থাকা উভয় ড্রাইভারই নিজেদের গাড়ি থেকে বের করে নিচ্ছেন সর্বোচ্চটা।
নিজের রেস বাজে গেলেও খুশি ম্যাক্স। প্রতিপক্ষ যেই হাস্যরসাত্মক ভুল করেছে তার চেয়ে বরং ভাগ্যের জেরেই শেষ হয়েছে তার রেইস। তবে, দলের আরেক ড্রাইভার কে সংবর্ধনা জানাতেও ভুলেননি ম্যাক্স।
মোট কথা, পিরেলির টায়ারের সব সমস্যা, সেবাস্তিয়ান ভেট্টেল আর পিয়ের গ্যাসলির ড্রাইভিং দর্শন, লুইস হ্যামিল্টন এর ভুল। সব ছাপিয়েই শীর্ষে সার্জিও “চেকো” পেরেজ। হাইব্রিড ভি৬ এর আমলে তিনিই একমাত্র ড্রাইভার যিনি দুইটি ভিন্ন দলের হয়ে রেস জিতলেন। আর সেবাস্তিয়ান এবং সার্জিও হলেন ইতিহাসের প্রথম দুই ড্রাইভার যারা ৪টি ভিন্ন দলের হয়ে পোডিয়ামে দাঁড়ালেন।
সেবাস্তিয়ান পোডিয়াম পেয়েছেন (টরো রোসসো, রেডবুল, ফেরারি আর এস্টন মার্টিনে) এর হয়ে
সার্জিও পেয়েছেন (রেসিং পয়েন্ট, ফোর্স ইন্ডিয়া,সাউবার আর রেডবুলে) এর হয়ে।
এবছরের চ্যাম্পিয়নশীপ প্রতিযোগিতায় শীর্ষে রেডবুল আর ম্যাক্স। পেছনে খুব কাছাকাছিই মার্সিডিজ আর লুইস।