যখনই বাংলাদেশ ক্রিকেটের কথা আসে তখন তামিম ইকবালের পারফর্মেন্স রীতিমত খুব সমালোচনার একটা বিষয় হিসেবে মানুষের ভেতরে থাকে তবে আজকের বিষয় তামিম ইকবাল কেমন ছিলেন টেস্ট ক্রিকেটে। প্রথমেই বলে রাখা বাহুল্য যে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট খুবই সীমিত ইতিহাসের টেস্ট ক্রিকেট যেখানে বাংলাদেশের প্রমাণ করার সুযোগ যেমন ছিলো কম ঠিক তেমনি তামিম ইকবাল তো আর টিমের বাইরের কেউ নন।

বাংলাদেশ এর জন্য তিনি টেস্ট ক্রিকেটে খুবই সাদামাটা একটা ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন অনেকে এটা মনে করেন তবে কথাটা আংশিকভাবে সত্যি তামিম ইকবালের ব্যাটিং এভারেজ ৩৯.৫৭ হলেও তিনি তার ক্যারিয়ারে স্ট্রাইক রেট রেখেছেন ৫৭.৭৫ এবং একটু আজব লাগলেও সত্যি যা ভিরাট কোহলির টেস্ট স্ট্রাইক রেট থেকে একটু বেশি। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে একটা মিডেল পজিশনে খেলার ব্যাটসম্যান এর সাথে তার তুলনা কীভাবে হয় তাহলে বলা যাক ইংল্যান্ড কিংদবন্তী ওপেনার কুক এর কথা
যার স্ট্রাইক রেট ৪৬.৯৬ যা তামিম ইকবাল থেকে অনেক কম এবং এভারেজও প্রায় তার কাছাকাছি।

এই কথাগুলোর মানে একদমই এমন না যে তামীম ইকবাল এদের থেকে আরও প্রতিভাবান অথবা দক্ষ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এলেস্টার কুক তার দেশের হয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন প্রায় ১৬১টি যেখানে তিনি ২৯১ বার সুযোগ পেয়েছেন ব্যাটিং করার আবার নিজ দেশের মাটিতে সুযোগ পেয়েছেন ৮৯ টি টেস্ট ম্যাচ খেলার এবং বাহিরের মাটিতে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেয়েছেন ১২৫ বার। কিন্তু তামীম ইকবার তার পুরো টেস্ট ক্যারিয়ারে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলতে পারেননি একটি টেস্টও এবং ইংল্যান্ড এর মাটিতে খেলেছেন ২ টি টেস্ট এবং ২ টি ম্যাচ এই তিনি করেছেন শতক যার একটি ছিলো লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড এ

Tamim 2411659 - ArenaHype
Source; Sky Sports

একটা টেস্ট ব্যাটসম্যান বিদেশের মাটিতে কেমন পারফর্মেন্স করেন সেটার মাধ্যমে সাধারণত তার দক্ষতা,কনফিডেন্স ও সম্ভাবনার পরিচয় পাওয়া যায় কারণ সেই পরিবেশটা তার জন্য একদম পরিচিত থাকে না। এবার যদি তুলনা করি তামিম ইকবাল এবং অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ডেভিড ওয়ারনারের যেখানে ওয়ারনার বাহিরের মাটিতে ৩৯ টি টেস্ট খেলে মোট রান করেছেন ২৫২১ এবং ৩৩.১৭ এর এভারেজে সেখানে তামিম বাহিরের মাটিতে ২৫ টি টেস্ট খেলে মোট রান করেছেন ২০৫৪ এবং ৪১.৯১ এর এভারেজে (তুলনা ঠিক রাখতে তামিম ইকবালের জিম্বাবুয়ের মাটিতে করা রান বাদ রাখা হয়েছে কারণ ওয়ারনার এই সুযোগটি পায়নি)।

এবং যদি টেস্ট ক্রিকেটের হিসাবে বলা যায় তামিম ইকবাল তেমন সুযোগ পাননি নিজেকে প্রমাণ করার আর যখনই পেয়েছেন সেটাকে কাজে লাগিয়ে দেখিয়েছেন যেখানে ক্রিকেটের তিন মোড়ল এর সাথে তার ব্যাটিং এভারেজ ৪২.২৫ এর উপরে এবং তিনি তার পুরো ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র ৬৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। তাই সমালোচনায় মগ্ন আমরা জানিও না কাজ কি নিয়ে করা উচিত ও কথা কি নিয়ে বলা উচিত।

সমালোচনা হবে রাগ হবে এটাই স্বাভাবিক অভিমান ছাড়া ভালোবাসা হয় না। তবে স্বীকার করা এবং নিজেদেরকে ভালোবেসে সম্মান দিতে পারাটা জরুরি এবং এই লেখার সাথে সাথে এই কথাটি আমি নিজেকেও বলছি।