লো স্কোরিং সিরিজ হলেও প্রতিটি ম্যাচেই দুদলের লড়াই হয়েছে জমপেশ। কিন্তু শেষ ম্যাচে অজিদের এমন অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হবে তা হয়তো কেউই ভাবে নি। ৬২ রানে গুটিয়ে গিয়ে নতুন রেকর্ড গড়লো ওয়েডবাহিনী। এটাই আন্তর্জাতিক টি২০ তে অজিদের সর্বনিম্ন রান, আগের সর্বনিম্ন রান ছিল ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৯। টি২০ বিশ্বকাপের মাস দুয়েক আগে এমন কীর্তি অস্ট্রেলিয়ার জন্য ছোট-খাটো ধাক্কাই বটে!
স্মিথ, ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েলদের ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার এই দল টা কতটা আনকোরা, তা তারা উইন্ডিজদের কাছে টি২০ সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে হারের মাধ্যমে প্রমাণ করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে সরাসরি মিরপুরে ‘দুর্বল টি২০ দল’ বাংলাদেশের সাথে টি২০ সিরিজ খেলতে এসে কোথায় একটু আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে, উলটো বাংলাদেশের সাথে প্রথমবার কোনো সিরিজ হার, সেই সাথে টি-টোয়েন্টি তে নিজেদের সর্বনিম্ন রান করার লজ্জা!
প্রথম তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ আগেই নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা। বাংলাওয়াশের সুযোগও ছিল। কিন্তু ৪র্থ টি২০ জিতে সেই লজ্জা থেকে রক্ষা পায় অস্ট্রেলিয়া।
প্রথম চার ম্যাচ একই একাদশ নিয়ে খেলার পর ৫ম ম্যাচে একাদশে দুটি পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। শামিম ও শরিফুলের স্থলে একাদশে সুযোগ মেলে মোসাদ্দেক ও সাইফুদ্দিনের। এ ম্যাচে ওপেনিংয়ে দেখা যায় নাইমের সাথে মেহেদিকে, শুরুটা ভালোই করে নাইম(২৩) ও মেহেদি(১৩), পাওয়ারপ্লে তে তান উঠে এক উইকেটে ৪৬, যা এই সিরিজে সর্বোচ্চ। এরপর রানরেট ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। চারে নেমেও সৌম্য সরকার খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি, ১৮ বলে ১৬ রান; পুরো সিরিজ বিবেচনা করলে ‘লর্ড’সৌম্য আবারও ফ্লপ! এদিকে মোহাম্মদ মিথুনকে ‘লর্ড’ উপাধিমুক্ত হওয়ার একটা সুযোগ শেষ ম্যাচে হয়তো দেওয়াই যেত।
ইনিংসের শেষ দিকে নাথান ইলিস ও ক্রিস্টিয়ানের বোলিং তোপে রান তুলতে বেশ বেগ পেতে হয় ব্যাটসম্যানদের। শেষ ৩১ বলে ৪ উইকেট খরচে রান আসে মাত্র ২৬! শেষ পর্যন্ত ১২২ রানের টার্গেট দিতে সমর্থ হয় স্বাগতিকরা।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে সিরিজের প্রথম চার ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে অজিরা। নাসুম আহমেদের জোড়া আঘাতে পতন শুরু হয় অজিদের ব্যাটিং লাইন আপের। ফর্মে থাকা মিচেল মার্শ এবং ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানও ব্যর্থ হন অস্ট্রেলিয়ার রানের চাকা সচল রাখতে। সর্বোচ্চ ২২(২২) রান করেন কাপ্তান মেথ্যু ওয়েড। আগের ম্যাচে একই ওভারে পাঁচটি ছয় খাওয়া সাকিব আল হাসানের এ ম্যাচের বোলিং ফিগার ৩.৪-১-৯-৪!
সাইফুদ্দিন ও নাসুম নেন যথাক্রমে ৩টি ও ২টি করে উইকেট।
ফলাফল, অস্ট্রেলিয়া ১৩.৪ ওভারে ৬২ রানে প্যাকেট! বাংলাদেশ ৫ম টি২০ তে ৬০ রানে জিতে ৪-১ ব্যবধানে অজিদের সিরিজ হারালো!! ম্যাচ ও সিরিজসেরা হন সাকিব আল হাসান। এ ম্যাচে ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে টি২০ তে এক হাজার রান ও একশ উইকেটের মালিক হওয়ার রেকর্ড স্পর্শ করেন সাকিব আল হাসান!
মূলত সামনের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি২০ বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করেই অস্ট্রেলিয়ার সাথে ৫ ম্যাচের টি২০ সিরিজের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এমন স্লো উইকেটে সিরিজ আয়োজন করে বাংলাদেশ কিংবা অস্ট্রেলিয়া কে কতটুকুই বা লাভবান হয়েছে.. সে প্রশ্ন থেকেই যায়।