হোম কন্ডিশনের সুবিধা নেয় না এমন দল চোখেই পড়ে না। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ যদি দেয়া হয় সেটা হবে ভারত । আইসিসির মোড়লদের একটি। কিন্তু সে তো হোমে, ভারত তো দেশের মাটির বাইরেও ম্যাচ,সিরিজ অহরহ জিতেই চলেছে। এমনকি শেষ টেস্ট ম্যাচটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ী দলটি কিন্তু ভারত আর খেলা হয়েছিল লর্ডসে। তাহলে প্রশ্নটির উত্তরের দিকে যাওয়া যাক।

গত উইন্ডিজদের সফর থেকে শুরু করে সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজ প্রতিটি সিরিজের পিচের দিকে যদি তাকানো হয় সবগুলোই কিন্তু স্পিনিং অথবা স্পিন সহায়ক উইকেট। যাতে দেখা যায় বাংলাদেশ এই পিচ গুলোতে খেলে বেশ সহজেই জয় তুলে নেয়। কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠটার দিকে তাকালে চোখে পড়ে ভিন্ন দৃশ্য। নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা সফর ছিল পুরোটাই হতাশার।

এখন স্পোর্টিং উইকেটে না খেলে এই রকম উইকেটে খেললে ঠিক লাভ কতটা হবে তার প্রশ্নটাতে শেষ সিরিজটাতে ম্যান অফ দ্য সিরিজ হওয়া সাকিব আল হাসান উত্তরে বলেছিলেন জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ ।  এমনকি নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন ও জয়টাকেই বড় করে দেখেছেন। তবে পিচ নিয়ে কথা বলার সময় তিনি সামনের নিউজিল্যান্ড সিরিজে এতটা লো স্কোরিং পিচ হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন। 

 তবে এই জয়গুলো মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখছে দলের ক্রিকেটারদের। এই মানসিকভাবে চাঙ্গা থাকাও অনেক ক্ষেত্রে ম্যাচে সুবিধা দেয় কারন তা তে আপনি বড় দল গুলোর বিরুদ্ধে খেলতে ভয় পাবেন না। তবে উল্লেখ্য যে সদ্য সমাপ্ত অস্ট্রেলিয়া সিরিজে প্রতিটি ম্যাচ ছিল লো স্কোরিং। আবার অন্য দল গুলোর বিপক্ষে খেলা সিরিজ গুলোতেও স্কোরকার্ড ছিল মলিন । 

হ্যাঁ ,বড় বড় দল গুলো বাংলাদেশের দিকে খাটো নজরে তাকায় কিন্তু ওই দল গুলোকে আপনার বানানো  উইকেটে হারানর চেয়ে যদি স্পোর্টিং উইকেটে হারানো যেত বা দেখা গেল হেরেই গেল বাংলাদেশ তাহলে অন্তত আর কিছু না হোক খেলোয়াড়রা স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে অন্তত পারত, কেননা দেশের লিগগুলোতে স্পিনিং পিচেই খেলা হয় এবং পেসারদের ব্যবহার করাই হয় না।  আর  স্পোর্টিং উইকেটে খেলার অভাবেই দেখা যায় ক্রিকেটারদের ঐ স্পোর্টিং উইকেটে তখন আর খেলতে পারেন না বা সমস্যায় পড়ে যান। 

সামনের অক্টোবারে আবুধাবিতে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই বাংলাদেশ এতো টি-টোয়েন্টি ফরমেটে ম্যাচ ও সিরিজ খেলছে। কিন্তু বিশ্বকাপে কন্ডিশন প্রায় একই থাকলেও স্পোর্টিং উইকেটেই খেলা হবে। তাতে যদি স্পিন সহায়ক উইকেটে খেলে গিয়ে স্পোর্টিং  ধরণের উইকেটে খেলতে হয় এবং বাংলাদেশ মানিয় না নিতে পারে তবে সমস্যাটা বোর্ড এবং স্পিনিং উইকেটে খেলার জন্যই হবে হয়ত। এখন শুধু মানসিকভাবে ফিট থাকাটাই এবং লো স্কোরিং উইকেটে খেলে অভ্যস্ত হয়ে পড়াটা কতটা কাজে দিবে তাই দেখার বিষয় এবং তা তে ক্ষতি কি লাভ হচ্ছে তাও বুঝা যাবে, কেননা দিনশেষে আপনি বিশ্ব আসরেই যদি নিজেকে মেলে ধরতে না পারেন তবে অস্ট্রেলিয়াকে ৬০ রানে এক ম্যাচে হারিয়ে বা এক সিরিজে খর্ব শক্তির পাঠানো দলকে ৪-১ ব্যবধানে হারানোর মধ্যে কোনো লাভ নেই , আপনাকে কেউ শক্তিশালী হিসেবে দেখবেই না। আর তাই প্রতিবারই অন্য বড় দলগুলো হয় বাজে দল আপনার সাথে খেলতে পাঠাবে অথবা খেলার আগ্রহই দেখাবে না। তাতে এখন দেখার বিষয় তাতে আখেরে বাংলাদেশের কি লাভ হচ্ছে না ক্ষতি?